ওয়ার্ড প্রসেসিং-৩

পূর্ববর্ত্তী অধ্যায়ে আমরা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড উইন্ডোর বিভিন্ন মেনু, সাবমেনু ও খুটিনাটি অনেক বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। এ অধ্যায়ে আমরা আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

ফাইল ফরম্যাটিং

শুধু টাইপ করা এবং সেভ করে ফাইল তৈরি করা জানলেই চলবে না। উক্ত সেভ করা ফাইলটি সুনদর ভাবে উপস্থাপন করে সেটাকে মুদ্রণ পর্যায় পর্যন্ত অর্থাৎ প্রিন্ট করা পর্যন্ত ফাইনাল কাজগুলোও জানতে হবে। কোন তৈরি করা ফাইলকে সুষ্ঠুভাবে উপস্থাপন করাকে বলা হয় ফাইল ফরম্যাটিং করা। কোন ফাইল ফরম্যাট করার জন্য বিভিন্ন প্রকারের পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। তার মধ্যে প্রধান কাজ হলো-

(১) পাতার মাপ ঠিক করে নির্ভুল টেক্সট টাইপ করে সেভ করার মাধ্যমে একটি ডকুমেন্ট ফাইল তৈরি করা।

(২) ডকুমেন্টের অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করা।

(৩) বিশেষ বিশেষ শব্দ বা বাক্যের ষ্টাইল বদলানো, যেমন- বোল্ড, ইটালিক, আন্ডারলাইন, সাইজ ছোট বড় করা ইত্যাদি।

(৪) বিভিন্ন স্পেসিং যেমন-লাইন স্পেসিং, প্যারাগ্রাফ স্পেসিং ইত্যাদি ঠিক করা।

(৫) কলামের মাধ্যমে পাশাপাশি টেক্সট নিয়ে আসা।

(৬) প্রয়েজনে ট্যাব বা ইভেন্ট সেট করা।

(৭) টেবিল তৈরি বা সেল তৈরি করা।

(৮) নির্দিষ্ট কিছু টেক্সট ঘিরে বক্স তৈরি করা।

(৯) টেক্সটের মধ্যে কোন নির্দিষ্ট হেডিংকে ডিজাইন আকারে সাজানো।

(১০) প্রয়োজনে টেক্সটের মধ্যে ছবি ব্যবহার করা।

(১১) হেডার ফুটার ব্যবহার করা।

(১২) প্রয়োজনীয় সব কাজ শেষ করে প্রিন্ট করা।

তাহলে এবার ফরম্যাটিং শুরু করা যাকঃ ফরম্যাটিং এর জন্য উপরোল্লেখিত কাজগুলো আমরা পর্যায়ক্রমিক ভাবে করবো। প্রথমে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ওপেন করতে হবে। ওয়ার্ডের খোলা উইন্ডোতে মেনুবারের ফাইল মেনুর অধীনে পেজ  সেটআপ মেনু ওপেন করে পাতার মাপ ঠিক করে নিতে হবে।

কম্পিউটারে কোন টেক্স ডকুমেন্ট তৈরি করে তা মনিটরের পর্দায় দেখা যায়। এর চুড়ান্ত ফলাফল পেতে তা কাগজে প্রিন্ট করতে হয়। প্রিন্টারের কি ধরণের কাগজ ব্যবহার করা হবে তা টেক্সট তৈরির আগেই ঠিক করে নিতে হয়। আর এই কাগজের ও লেখার ধরণের উপরই উক্ত টেক্সটের পাতার মাপ ঠিক করতে হয়। প্রিন্টারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরণের কাগজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কাগজের মাপ নিচে দেওয়া হলো। যেমনঃ

US Letter (সাইজ 8.50×11ইঞ্চি)

A4 Letter (সাইজ 8.27×11.69ইঞ্চি)

Legal(সাইজ 8.50×14ইঞ্চি)

Exceutive(সাইজ 7.75×10.50ইঞ্চি)

Folio(সাইজ 8.5×13ইঞ্চি)

Tabloid(সাইজ 11×17ইঞ্চি)

A3 Size(সাইজ 11.69×16.54ইঞ্চি)

A5(সাইজ 5.83×8.27ইঞ্চি)

B4 size(সাইজ 10.12×14.33ইঞ্চি)

B5 size(সাইজ 7.17×10.12ইঞ্চি)

এখানে উল্লেখিত বিভিন্ন সাইজের কাগজের মধ্যে সাধারণ টেক্স ফাইল প্রিন্ট করার কাজে বেশির ভাগ সময় ব্যবহার করা হয়ে থাকে তিন ধরণের কাগজ। যথা-

US Letter (সাইজ 8.50×11ইঞ্চি)

A4 Letter (সাইজ 8.27×11.69ইঞ্চি)

Legal(সাইজ 8.50×14ইঞ্চি)

এরমধ্যে A4 Letter (সাইজ 8.27×11.69ইঞ্চি)সাইজের কাগজটি সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয়। আমরা এখন এই সাইজের কাগজের ব্যবহার করে পাতার মাপ ঠিক করবো। মনে করি আমরা এখন একটি ডকুমেন্ট ফাইল তৈরীর জন্য কাগজের মাপ ঠিক করবো। প্রথমে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের খোলা উইন্ডোর ফাইল মেনুর উপর মাউসের পয়েন্টার নিয়ে ক্লিক করবো এবং এখানে প্রদর্শিত মেনু তালিকা থেকে পেজ সেটআপ মেনুতে ক্লিক করে পেজসেটআপ বক্স ওপেন করে পেপার সাইজ বক্সে ক্লিক করে ড্রপডাউন মেনু থেকে পাতার সাইজ A4 Letter নির্বাচন করবো। এরপর মার্জিন বক্সে ক্লিক করে টপ ০.৮ইঞ্চি, বটন ০.৮ইঞ্চি, লেফট ০.৮ইঞ্চি, রাইট ০.৮ইঞ্চি নির্বাচন করে নিচের ওরিয়েন্টশন অংশে পোর্টরেইট বক্সে ক্লিক করে নিচের ওকে বোতাম ক্লিক করলে আমাদের দেওয়া পরিমাপে পাতাটি প্রদর্শিত হবে। অর্থাৎ লেখার জন্য সাদা পাতা প্রস্তুত।লেখার পূর্বে আরও কিছু সেটিং এর কাজ করে নিতে হবে, যেমন অক্ষর নির্বাচন। এক্ষেত্রে প্রথমে ঠিক করে নিতে হবে আমারা ডকুমেন্ট ফাইলটি বাংলা ভাষায় না ইংরেজি ভাষায় লিখবো। বাংলা হলে অক্ষর বক্স থেকে ‘সুতুনি এমজে’ ইংরেজি হলে অক্ষর বক্স থেকে ‘টাইমস নিউ রোমান’ নির্বাচন করে নিতে হবে। এরপর ফন্ট সাইজ বক্স থেকে ফন্টের সাইজ ১৪পয়েন্ট করে দিলে হবে। এবার টাইপ করার পালা।মনেকরি নিচের ডকুমেন্ট ফাইলট আমরা তৈরী করবো।

আজব প্রাণির কথাঃ

বিচিত্র এই পৃথিবী, তারচেয়েও বিচিত্র এই পৃথিবীতে বসবাসকারী বিভিন্ন প্রাণি। মানুষ থেকে শুরু করে কত ধরণের প্রাণি এই পৃথিবীতে বসবাস করে তার কোন ইয়ত্তা নেই।এমন অনেক প্রাণি আছে- যার সবগুলোর সন্ধান এখনও পর্যন্ত জীববিজ্ঞানীরা পান নি। এমন কিছু প্রাণি আছে, যেগুলোর আকার-আকৃতি দেখলে সাধারণত: অবাক হতে হয়। আজ বৈচিত্রময় পৃথিবীর আজব কিছু প্রাণির কথা জানবো। খুব ছোট্ট প্রাণির কথা বলতে গেলে প্রথমেই মনে পড়ে যায় ইনফিউসোরিয়ার কথা। সমুদ্রে তো বটেই খালে বিলেও এই প্রাণি দেখতে পাওয়া যায়। কোন কোন স্থানে এরা প্রচুর পরিমাণে দলবদ্ধ হয়ে বাস করে।

টাইপ শেষ হলে কীবোর্ড থেকে Ctrl+S চেপে ফাইলটি সেভ করতে হবে।

অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করাঃ

টাইপ করা অংশটুকু ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে উপরের ‘আজব প্রাণীর কথা’ হচ্ছে হেডিং আর তার নিচের অংশটুকু হচ্ছে টেক্সট। কিন্তু এই টেক্সটের বাম পাশ সমান এবং ডান পাশ এলোমেলো- কেমন যেন অগোছালো। সাধারণত: কোন ডকুমেন্ট বা টেক্সট এরকম থাকে না। এর সৌন্দয্য বৃদ্ধির জন্য টেক্সটের দু’পাশ সমান রাখতে হয়। এটাকে জাষ্টিফাই করা বলে। এ কাজটা করার জন্য যা করতে হবে-

(১) টেক্সট অংশটুকুর উপর মাউসের পয়েন্টার রেখে বাম পাশের বোতাম পরপর তিন বার চাপলে অথবা, মাউসের পয়েন্টার টেক্সটের বাম পাশে নিয়ে অর্থাৎ যেখান থেকে টেক্সটটি লেখা শুরু করা হয়েছিল সেখানে মাউসের পয়েন্টার নিয়ে বাম পাশের বোতাম চেপে ধরে টেনে নিয়ে(ড্রাগ করে)টেক্সট ডকুমেন্ট টুকু সিলেক্ট করে নিতে হবে। এ কাজটি কীবোর্ড থেকে শিফট কী ও এ্যারো কী ব্যবহার করেও করা যায়। তারপর ফরম্যাটিং বারের জাষ্টিফাই অ্যালাইনমেন্ট চিহ্নটি সিলেক্ট করতে হবে অথবা কীবোর্ড থেকে Ctrl+J চাপ দিলে টেক্সটটুকুর দু’পাশ সমান হয়ে যাবে।

বোল্ড, ইটালিক ও আন্ডারলাইন করাঃ

টাইপ করা অংশটুকুর উপরে আজব প্রাণির কথা বাক্যটি হচ্ছে হেডিং। পরের অংশটুকু সাধারণ টেক্সট। ধরাযাক ডকুমেন্টের সৌন্দয্য বৃদ্ধির জন্য হেডিং অংশটুকু একটু মোটা অক্ষরে রাখলে ভাল দেখাবে।এ কাজের জন্য যা করতে হবে-

(১) হেডিংটুকু মাউসের সাহায্যে সিলেক্ট করতে হবে।

(২) কীবোর্ড থেকে Ctrl+B বোতাম চাপতে হবে। অথবা ফরম্যাট টুলবার থেকে B লেখা বোল্ড চিহ্নে ক্লিক করতে হবে। লেখাটুকু অর্থাৎ হেডিং টুকু মোটা হয়ে যাবে।

(৩) এরপর হেডিংটুকু সিলেক্ট করা অবস্থায় ফন্ট সাইজ ঠিক করার জন্য ফন্ট বক্স এর তীর চিহ্নের উপর মাউসের ক্লিক করে ২৮ পয়েন্ট সিলেক্ট করলে হেডিংটা বেশ মোটা হবে।

(৩) এরপর হেডিংটুকু সিলেক্ট করা অবস্থায় কিংবা বাক্যের মধ্যে মাউসের পয়েন্টার রেখে কীবোর্ড থেকে Ctrl+E বোতাম চাপতে হবে। অথবা ফরম্যাট টুলবারের সেন্টার লেখা চিহ্নের উপর মাউসের সিঙ্গল ক্লিক করতে হবে। ফলে হেডিং অংশটুকু মাঝখানে চলে আসবে।

ধরাযাক, ডকুমেন্টের সৌন্দয্য বৃদ্ধির জন্য সাধারণ টেক্সট অংশের মধ্যে পৃথিবী শব্দটা বাঁকা করা দরকার।এ কাজের জন্য যা করতে হবে-

(১) প্রথমে মাউসের সাহায্যে পৃথিবী লেখা অংশটুকু সিলেক্ট করে নিতে হবে।

(২) এরপর কীবোর্ডের Ctrl+I বোতাম চাপতে হবে। অথবা ফরম্যাট টুলবারের I লেখা চিহ্নের উপর মাউসের সিঙ্গল ক্লিক করতে হবে। ফলে হেডিং অংশটুকু একটু বাঁকা হয়ে প্রদর্শিত হবে।

(৩)এই একই নিয়মে প্রত্যেকটি পৃথিবী লেখা সিলেক্ট করে একই কমান্ড প্রয়োগ করলে সবকটি পৃথিবী লেখা একটু বাঁকা আকারে প্রদর্শিত হবে। অথবা, ইটালিক করা পৃথিবী শব্দটির মধ্যে মাউসের কারসর রেখে ফরম্যাট টুলবারের ফরম্যাট পেইন্টার এর ওপর দ্রুত মাউসের ডবল ক্লিক করতে হবে। ফলে মাউসের পাশে একটি ব্রাশের চিহ্ন দেখা যাবে। এবার যে শব্দটি বা বাক্য বা বাক্যাংশ সিলেক্ট করা হবে সেই শব্দ বা বাক্য বা বাক্যাংশটুকু সাথে সাথে ইটালিক হয়ে যাবে। এভাবে যে কোন স্টাইলকে(বোল্ড, ইটালিক, আন্ডার লাইন, আউটলাইন, শেড)ফরম্যাট পেইন্টারের সাহায্যে কপি করে অন্য শব্দের উপর প্রয়োগ করা যায়।

(৪) সব কাজ শেষ হয়ে গেলে ফরম্যাট টুলবারের ফরম্যাট পেইন্টার চিহ্নের উপর মাউসের সিঙ্গল ক্লিক করলে এই প্রোগামটি বন্ধ হয়ে মাউসের পয়েন্টারটি আবার আগের মতো হয়ে যাবে।

এবার ধরাযাক, সাধারন টেক্টটের মধ্যেকার প্রাণি শব্দটির নিচে দাগ দেওয়া বা আন্ডার লাইন করা প্রয়োজন। এজন্য যা করতে হবে-

(১) প্রানি শব্দটাকে সিলেক্ট করে নিতে হবে। এরপর মাউসের পয়েন্টার ফরম্যাট টুলবারের ইংরেজী ‘ইউ’ লেখা ‍চিহ্নটির উপর ক্লিক করলে সিলেক্ট করা প্রাণি শব্দটি আন্ডার লাইন হয়ে যাবে। অথবা কীবোর্ড থেকে Ctrl+U কমান্ড দিয়েও কাজটি করা যাবে।

(২) প্রত্যেকটি প্রাণি শব্দকে আন্ডার লাইন করতে হলে আগের মতো এক এক করে সিলেক্ট করে নিয়ে এই কমান্ড প্রয়োগ করলে সবকটি প্রাণি শব্দের নিচে আন্ডার লাইন হয়ে যাবে।

বিভিন্ন স্পেসিং ঠিক করা বা ফাঁক দেওয়াঃ

প্যারাগ্রাফ স্পেসিংঃ ধরি হেডিং এর নিচে কিছুটা স্পেস দেওয়া দরকার। আর একে বলা হয় প্যারাগ্রাফ স্পেসিং। হেডিং টাইপ করার পর এন্টার কী চাপ নিচের লাইনের টেক্সট টাইপ করা হয়। ফলে হেডিং এবং নিচের টেক্সট এর মধ্যে আলাদা প্যারাগ্রাফ তৈরী হয়েছে। প্যারাগ্রাফ স্পেসিং এর জন্য যা করতে হবে-

হেডিংটি সিলেক্ট করা অবস্থায় ফরম্যাট মেনুর অধীনে প্যারাগ্রাফ মেনুটি সিলেক্ট করতে হবে। ফলে প্যারাগ্রাফ টাইটেল যুক্ত একটি ডায়ালগ বক্স প্রদর্শিত হবে।ডায়ালগ বক্সের টাইটেলবারের নিচে ‘ইনডেন্টস এন্ড স্পেলিং’,‘লাইন এন্ড পেজ ব্রেকস’ এবং ‘এসিন টেকনোলজি’ নামে তিনটি মেনু কমান্ড পাশাপাশি দেখা যাবে।প্রথমে ‘ইনডেন্টস এন্ড স্পেলিং’ মেনুটি সিলেক্ট করা থাকে। ডায়ালগ বক্সের নিচের দিকে এই মেনুর অধীনে স্পেলিং অংশের মধ্যে ‘বিফোর’ এবং ‘আফটার’ নামে দু’টো শব্দ লেখা দেখা যাবে। এই বক্সে যে কোন সংখ্যা বসিয়ে টেক্সট এর উপরে অথবা নীচে স্পেস বা ফাঁক তৈরী করা যায়। এখন আমাদের প্রয়োজন হেডিং এর নিচের দিকে ফাক দেওয়া, তাই আমোদের আফটার ঘরের মধ্যে ৮ সংখ্যাটি টাইপ করতে হবে। এর অর্থ হলো হেডিং এর নিচে ৮ পয়েন্ট ফাক দেওয়া। এরপর ওকে ঘরে মাউসের পয়েন্টার নিয়ে ক্লিক করলে হেডিং এর নিচে বেশ কিছুটা ফাক তৈরী হবে।

লাইন স্পেসিংঃ কোন প্যারাগ্রাফের ভেতর দুটি লাইনের মাঝখানে ফাঁক দেওয়াকে লাইন স্পেসিং বলে। সাধারণত: মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে একটা অটোমেটিক লানি স্পেসিং দেওয়া থাকে।অর্থাৎ লেখার পয়েন্টের চেয়ে দুই পয়েন্ট বেশী স্পেস দেওয়া থাকে। লেখা যদি ১৪ পয়েন্ট হয় তাহলে অটোমেটিক লাইন স্পেস হবে ১৬ পয়েন্ট।লাইন স্পেস এর চেয়ে বেশী করতে হলে যা করতে হবে-

মাউসের পয়েন্টার টেক্সেটের মধ্যে রেখে তারপর ফরম্যাট মেনুর অধীনের প্যারাগ্রাফ মেনু সিলেক্ট করে ডায়ালগ বক্স থেকে লাইন স্পেসিং অংশের প্রথম ঘরে ‘সিম্পল’ লেখার ডান পাশের এটি লেখা বক্সে  ১৮ পয়েন্ট অথবা স্পেস যা দিতে চাই তা টাইপ করতে হবে।এরপর ওকে সিলেক্ট করতে হবে অথবা কীবোর্ড থেকে এন্টার কী চাপতে হবে। এবার দেখা যাবে পূর্বের তুলনায় লাইনগুলো বেশ ফাকা ফাকা লাগছে।

ইনডেন্টেশনঃ আমাদের টেক্স একটি প্যারাগ্রাফ। কিন্তু এই প্যারাগ্রাফের প্রথমলাইন কিছুটা ভেতরে ঢোকানো থাকলে কাজটা সম্পূর্ণ হতো। তাই এ কাজের জন্য নিচের ধারাবিহক কাজগুলো করতে হবে-

মাউসের পয়েন্টার টেক্সেটের মধ্যে রেখে তারপর ফরম্যাট মেনুর অধীনের প্যারাগ্রাফ মেনু সিলেক্ট করে ডায়ালগ বক্স থেকে ‘স্পেশাল’ লেখার বক্সের নন লেখা অংশের এ্যারো তে বা তীর চিহ্নের উপর মাউসের পয়েন্টার নিয়ে ক্লিক করে প্রদর্শিত ‘ফাস্ট লাইন’ এবং ‘হেডিং’ লেখা দুটি মেনু কমান্ড থেকে ফাস্ট লাইন সিলেক্ট করে পাশের বাই ঘরে দশমিক দুই পাঁচ টাইপ করতে হবে। এর অর্থ হলো প্রথম লাইনটি .২৫ইঞ্চি ডানে সরে যাবে। এরপর ডায়ালগ বক্সের ওকে লেখার উপর মাউসের ক্লিক করলে অথবা কীবোর্ড থেকে এন্টার কী চাপতে হবে। এবার দেখা যাবে প্রথম লাইনটি কিছুটা ডানে সরে গেছে। এই কাজটি অবশ্য রুলার ব্যবহার করে অথবা ট্যাব ব্যবহার করেও করা যায়।

কলাম তৈরী করাঃ

কলাম অর্থ হচ্ছে কোন টেক্সট বা লেখাকে নির্ধারিত স্পেসিং বা ফাক দিয়ে পাশাপাশি সাজানো। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- খবরের কাগজের লেখা সাজানোর ষ্টাইলের অনুরূপ। এই কলাম সাধঅরণতঃ ব্যবহৃত পাতার মাপ হিসেবে ২/৩ অথবা ৪/৫ টাও হতে পারে। অর্থাৎ ইচ্ছামতো কলাম নেওয়া যায়। যাহোক কলাম আকারে টেক্সট সাজাতে বেশী পরিমাণে টেক্সট দরকার হয় তা নাহলে ভাল দেখা যাবে না। তাই এই অধ্যায়ের প্রথম দিকে আমরা একটি টেক্সট লিখেছি মনে আছে নিশ্চয়ই। ‘আজব প্রাণির কথা’ শিরোনামে লেখা ঐ টেক্সটটুকু শিরোনাম বাদে সিলেক্ট করে কীবোর্ড থেকে‘ সিটিআরএল+সি’ কমান্ড দিয়ে কপি করে টেক্সট এর নিচে মাউসের পয়েন্টার রেখে আবার কীবোর্ড থেকে ‘সিটিআরএল+ভি’ কমান্ড করলে লেখার নিচে লেখা পেষ্ট হবে। এভাবে বেশ কয়েবার এই ‘সিটিআরএল+ভি’ কমান্ড করলে পাতা ভরে যাবে। এবার  কীবোর্ড থেকে ‘সিটিআরএল+এস’ কমান্ড করে ফাইলটি সেভ করবো। এখন আমরা কলাম তৈরি করবো। কলাম তৈরি করতে যা করতে হবে-

00মেনু বারের ফরম্যাট মেনুতে একবার ক্লিক করলে একটি মেনু কমান্ডের তালিকা থেকে কলামস মেনুটি সিলেক্ট করতে হবে। ফলে একটি  ডায়ালগ বক্স বা সংলাপ ঘর দেখা যাবে এবার সংলাপ ঘরে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে একেবারে উপরে প্রেষ্ট নামে একটা অংশ আছে। সেখোনে ৫টি কলামের ঘর দেখা যাবে এবং এখানে প্রতিটি ঘরের নিচে কলামের নম্বার বা সংকেত সূচক নাম দেয়া আছে। আমরা কি ধরণের কলাম তৈরি করবো এই ঘর দেখে তা বুঝতে পারবো। এই বক্সগুলোর সাহয্যে সর্ব্বোচ্চ তিনটি কলাম তৈরি করা যাবে। এর চেয়ে বেশি সংখ্যক কলাম তৈরি করতে হলে এই ৫টি বক্স এর নিচে নম্বার অফ কলাম নামে একটি ঘর আছে। এখানে ইচ্ছামতো কলাম সংখ্যা লিখে এবং কলাম স্পেসিং দিয়ে কলাম তৈরি করা যায়। প্রতিটি কলাম সমান মাপের তৈরি করার জন্য আরও একটি কাজ করতে হবে। Equal Column width ঘরের বাম পশে সাদা একটি বক্স দেখা যাবে ওখানে মাউস পয়েন্টার দিয়ে একবার ক্লিক করলে টিক চিহ্ন পড়বে। এবার  কীবোড থেকে এন্টার কী চেপে অথবা সংলাপ ঘরের ওকে বক্সে ক্লিক করলে দেখা যাবে আমাদের সিলেক্ট করা থাকলে লেখা কলামে ভাগ হয়ে গেছে। লেখা সিলেক্ট করা না হলে আমাদের লেখার পাতাটি কলাম আকারে ভাগ হয়ে আছে। এবার এর ভিতরে লিখলে বা লেখা পেষ্ট করলে লেখা কলাম আকারে দেখাবে।

ট্যাব এবং ইন্ডেন্ট সেট করাঃ

এবার আমরা কিভাবে ট্যাব এবং ইন্ডেন্ট করতে হয় তা শিখবো। এমএস ওয়ার্ড এর খোলা উইন্ডোর উপরের দিকে ভাল করে লক্ষ্য করলে একটি রুলার দেখা যাবে এই রুলারের বাম দিকে ইংরেজি এল অক্ষরের মতো একটি চিহ্ন আছে, এটাই হলো ট্যাব চিহ্ন। এই চিহ্নটির মধ্যে মোট চারটি চিহ্ন আছে। চিহ্নটির উপর মাউসের পয়েন্টার রেখে সিঙ্গেল ক্লিক করলে চিহ্নগুলো দেখা যাবে এবং একবার ক্লিক করলে একটি করে ট্যাব চিহ্ন পরিবর্তন হবে। এবার রলারের যেখানে মাউসের ক্লিক করা হবে সেখানে ঐ ইংরেজি এল চিহ্নিত ট্যাব তৈরি হবে।000এভাবে রুলারের যেখানে যেখানে ট্যাব চিহ্ন দেয়া হবে কীবোড থেকে ট্যাব কী চাপলে মাউসের পয়েন্টার এক একবারে ঐ ট্যাব চিহ্ন অতিক্রম করবে। ট্যাব কী চাপ দেয়ার পর লেখা শুরু করলে লেখা ঐ ট্যাব চিহ্নিত স্থান থেকেই শুরু হবে। এল আকারের এই ট্যাবটিকে লেফট ট্যাব বলে। মাউসের পয়েন্টার রুলারের ঐ ট্যাবের উপর রেখে বাম বোতাম চেপে ধরে নিচের দিকে টেনে ছেড়ে দিলে ঐ ট্যাব চিহ্নটি মুছে যাবে। এবার রুলারের একেবারে বাম পাশের ট্যাবের উপর ক্লিক করলে এল আকারের ট্যাব চিহ্ন বদলে ইংরেজি উল্টো টি এর আকার ধারণ করবে। এবার মাউস দিয়ে রুলারের মাঝখানে ক্লিক করলে সেখানে এই চিহ্নটি দেখা যাবে এটাকে সেন্টার ট্যাব বলে। কারণ এ অবস্থায় লেখা শুরু করলে লেখা মাঝখান থেকে শুরু হয়ে দুটিকে সরে যায়। ট্যাব চিহ্নটি মুছে ফেলে আবার রুলারের বাম পাশে এল চিহ্নের উপর আর একবার চাপ দিলে উল্টো এল অক্ষরের মতো আকার ধারণ করবে। এটাকে রাইট ট্যাব বলে। এই ট্যাব সিলেক্ট থাকলে লেখা ডান দিক থেকে শুরু হয়ে বামদিকে সরতে থাকে। এছাড়া আরও একটা ট্যাব আছে যা উল্টো টি এর সাথে দশমিক চিহ্ন যুক্ত থাকে। এটাকে দশমিক ট্যাব বলে।

টেবিল তৈরিঃ

 মেনুবারের টেবিল মেনু থেকে ইনসার্ট টেবিল অপশনে ক্লিক করে প্রয়োজন মতো  রো-কলামের সংখ্যা লিখে কমান্ড দিয়ে টেবিল তৈরি করা যায়। 0000এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড টুলবারের টেবিল আইকোনে ক্লিক করেও প্রয়োজন মতো রো-কলাম সিলেক্ট করে টেবিল তৈরি করা যায়। রো-কলাম কম বেশী হলেও পরবর্তীতে ড্র টেবিল অপশন থেকে প্রয়োজন মতো  রো-কলাম মোছা ও যোগ করা যায়।

টেক্সট হেডিং ডিজাইন করাঃ

এবার আমরা আমাদের লেখা টেক্সট এর হেডিং ডিজাইন করবো। ‘আজব প্রাণীর কথা’ শিরোনামে যে টেক্সটটি লেখা আছে ওটাকে ওপেন করে নিলেই চলবে। এবার যা করতে হবে- প্রথমে ঐ ‘আজব প্রাণীর কথা’ শিরোনামটুকু সিলেক্ট করে বা কালো করে নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড টুলবারের ড্রইং টুলের চিহ্নতে ক্লিক করতে হবে। ফলে উইন্ডোর নিচে একটি টুলবার দেখা যাবে যার নাম ড্রইং টুলবার।0

এই টুলবারের ইনসার্ট ওয়ার্ডআর্ট চিহ্নে বা ইংরেজী বড় হাতের A লেখা চিহ্নে ক্লিক করত হব। ফলে একটি ওয়ার্ডআর্ট গ্যালারী নামের বিভিন্ন ডিজাইন সম্বলিত একটি ডায়ালগ বক্স ওপেন হবে।000 বক্সের যে কোন ঘরের ডিজাইন পছন্দ করে তাতে ডবল ক্লিক করতে হবে।  লেখাটি উল্টোপাল্টা ইংরেজি বর্ণ নিয়ে একটি বক্সে দেখা যাবে। এবার  ডায়ালগ বক্সের ফন্ট অপশনের ড্রপ ডাউন মেনু থেকে ইচ্ছা মতো বাংলা ফন্ট সিলেক্ট করে ওকে করলে বা এন্টার বোতাম চাপলে হেডিংটি ডিজাইন হয় টেক্সটএ চলে আসবে। এবার উক্ত হেডিংটির উপর মাউসের পয়েন্টার রেখে ডান বোতাম চাপলে একটি মেনু কমান্ড তালিকা পাওয়া যাবে। 00উক্ত তালিকা নিচের দিকে ফরম্যাট ওয়ার্ডআর্ট  সিলক্ট করলে পাশের চিত্রের মতো আরও একটি সংলাপঘর দখা যাবে। এখান থেকে চিহ্নিত স্থানে ক্লিক করলে ওয়ার্ডআর্ট  ফরম্যাট হয়ে যাবে এবং ইচ্ছা মতো স্থান নাড়াচাড়া করা যাবে।

হেডার-ফুটারের ব্যবহারঃ

হেডার এবং ফুটার মনেই হলো ডকুমেন্টের উপরে বা নিচে অথবা উপরে এবং নিচে কোন বাক্য লেখা যা আপনা থেকেই প্রতি পাতায় উপরে-নিচে দেখা যাব। এটা করতে হলে ডকুমেন্ট পেজের চার পাশে যে মার্জিন আছে এই মার্জিনের উপরের অংশে মাউসের পয়েন্টার নিয়ে ডবল ক্লিক করলে লেখার পরিবেশ তৈরি হবে এবার যা লিখতে চাই এখানে লেখা যাবে। এরপর মাউসের মাঝখানে বোতাম স্ক্রল করে ডকুমেন্টের নিচের অংশে অর্থাৎ ফুটারেরর অংশে যা লিখতে চাই লিখে পাতার মাঝখানে মাউসের ক্লিক করলে কাজটি হয়ে যাবে। এবার কীবোর্ডের সিটিআরএল কী এর সাথে এস কী চাপলে ফাইলটি সেভ হয়ে যাবে। এর পর ডকুমেন্টের যতগুলো পাতা আছে বা তৈরি করা হবে সবগুলো পাতার হেডার ও ফুটারে ঐ লেখা দেখা যাবে।

কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ কীবোর্ড কমান্ডঃ

Ctrl+A= All select ;   Ctrl+B = Bold ; Ctrl+C = Copy ; Ctrl+D = Font Box ;  Ctrl+E = Center

Ctrl+F = Find Box ; Ctrl+G = Go to Box ; Ctrl+H = Replace Box ; Ctrl+I = Italic

Ctrl+J = Justify ; Ctrl+K = Hyperlink ; Ctrl+L = Left ; Ctrl+M = Decrease Indent

Ctrl+N = New page open ; Ctrl+O = Open Box ; Ctrl+P = Print Box

Ctrl+Q = Default Tab Sating  ; Ctrl+R = Right ; Ctrl+S = Save ; Ctrl+T = Increase Indent

Ctrl+U = Underline ; Ctrl+V = Paste ; Ctrl+W = Temporary Page Closed ; Ctrl+X = Cut

Ctrl+Y = (Redo)Repeat typing ; Ctrl+Z = Undo Typing

Ctrl+Alt+B = English to Bengali/ Bangali to English Writing Mood Command

Ctrl+Shift+Enter = Column Breaks ; Ctrl+ Enter = Page Breaks

(Ctrl+ =) Subscript লেখার ডান পাশে নিচে ছোট করে লেখার কমান্ড

(Ctrl+Shift++) Superscript লেখার ডান পাশে উপরে ছোট করে লেখার কমান্ড

(Alt+ =) Equation ভগ্নাংশ লেখার কমান্ড